মদিনা সনদ

পঞ্চম শ্রেণি (প্রাথমিক) - ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা - মহানবি (স)-এর জীবনাদর্শ ও অন্যান্য নবিগণের পরিচয় | | NCTB BOOK
15
15

মহানবি (স) মদিনায় হিজরত করে একটি আদর্শ সমাজ ও আদর্শ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হলেন। এখানে মুহাজির, আনসারসহ সকল মুসলমান এবং অন্যান্য ধর্মাবলম্বী-ইহুদি, খ্রিষ্টান ও অন্যান্য মতাদর্শের লোক একত্রে মিলেমিশে সুখে-শান্তিতে নিরাপদে বাস করবে। তাদের মধ্যে শান্তি, সম্প্রীতি বজায় থাকবে এবং স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্মকর্ম পালন করতে পারবে। সঙ্গে সঙ্গে মদিনার নিরাপত্তাও নিশ্চিত হবে এই উদ্দেশ্যে, তিনি সকল সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি লিখিত চুক্তি সম্পাদন করেন। এটিই মদিনা সনদ নামে খ্যাত এবং এটিই পৃথিবীর সর্বপ্রথম লিখিত সনদ। এই সনদে ৪৭টি ধারা ছিল। যেমন-

১. সকল সম্প্রদায় স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে। ধর্মীয় ব্যাপারে কেউ কারও ওপর হস্তক্ষেপ করবে না।

২. সনদে স্বাক্ষরকারী সকল সম্প্রদায়কে নিয়ে একটি সাধারণ জাতি গঠিত হবে এবং সকলে সমান নাগরিক সুবিধা ভোগ করবে।

৩. কেউ অপরাধ করলে তা তার ব্যক্তিগত অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে; সে জন্য গোত্র বা সম্প্রদায় দায়ী হবে না।

৪. হত্যা, রক্তারক্তি, ব্যভিচার ইত্যাদি পাপকর্ম নিষিদ্ধ করা হলো, মদিনা শহরকে পবিত্র বলে ঘোষণা করা হলো। 

৫. হযরত মুহাম্মদ (স)-এর পূর্ব অনুমতি ব্যতীত কেউ কারও বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারবে না । 

৬. সম্পদ্রায়গুলোর মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে মহানবি (স) তা মীমাংসা করে দিবেন ইত্যাদি।

মদিনার সনদ হযরত মুহাম্মদ (স)-এর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, কুটনৈতিক দূরদর্শিতা, ধর্মীয় সহিষ্ণুতা এবং সুন্দর সমাজ গঠনের এক জ্বলন্ত স্বাক্ষর বহন করে। এতে বিভিন্ন জাতির ধর্মীয় স্বাধীনতা ও আর্থ-সামাজিক অধিকার নিশ্চিত হয়।

Content added By
Promotion